ঢাকা: খুলনার ডুমুরিয়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইট প্রস্তুত ও পোড়ানো এবং ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের দায়ে ৭টি ইটভাটাকে ১১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে জরিমানা ধার্য এবং পানি ছিটিয়ে ভাটার জ্বলন্ত চুল্লী নিষ্কৃয়তা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম এবং ডুমুরিয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুর রহমান।
অভিযানে দণ্ডপ্রাপ্ত ইটভাটা গুলো হলো- আটলিয়া ইউনিয়নের কুলবাড়িয়া এলাকায় অবস্থিত আব্দুল হাই বাহার'র মেসার্স বাহার ব্রিক্স'র চুল্লি ভেঙে দেয়া হয় এবং পানি ছিটিয়ে ভাটার জ্বলন্ত চুল্লী নিভিয়ে নিষ্কৃয় করা হয়।
খর্ণিয়া ব্রিজের উত্তর পাশে অবস্থিত শাহাজান জমাদ্দার মালিকানাধীন সান ব্রিকসে ২ লাখ টাকা, রানাই এলাকায় অবস্হিত মেরী ব্রিকসে ২ লাখ টাকা ও আব্দুল লতিফ জমাদ্দারের জে.বি ব্রিকসে ২ লাখ টাকা জরিমানা এবং আমিনুর রশিদ'র মালিকানাধীন লুইন ব্রিকসে ২ লাখ টাকা,চহেড়া এলাকার গাজী আব্দুল হকের সেতু ব্রিকসে ১ লাখ এবং শোলগাতিয়া এলাকায় ইকবাল জমাদ্দারের স্টোন ব্রিকসে ২ লাখ টাকা জরিমানা সহ মোট ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা করা হয়।
এ সময় অধিকাংশ ইটভাটার জ্বলন্ত চুল্লিতে পানি ছিটিয়ে নিষ্কৃয় করা হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার উপজেলার শোলমারী নদী তীরবর্তী এনকেবি ব্রিক্সে ৫ লাখ টাকা, এসবি ব্রিক্সে ২ লাখ টাকা এবং সেতু ব্রিক্সে অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করে আদায় করা হয়।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া ও শোলগাতিয়া এলাকায় ভদ্রা ও হরি নদীর চর ভরাটিয়া জমির কিছু অংশ দখল করে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ইট ভাটা। ইট ভাটাগুলোর লাইসেন্স এবং পরিবেশ দপ্তরের ছাড়পত্রের মেয়াদ বেশি সময় ধরে উত্তীর্ণ হলেও অবৈধভাবে তা পরিচালিত হয়ে আসছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ডুমুরিয়ায় অবৈধ ভাবে পরিচালিত ইটভাটা নিয়ে ২০২১ সালে হাইকোর্টে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ নামে একটি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের রিট মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভদ্রা ও হরি নদীর তীরবর্তি ১৪টি ইট ভাটায় সরকারি জায়গা দখল এবং পরিবেশ দপ্তরের ছাড়াপত্রবিহীন ইট ভাটাগুলো বন্ধে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
যার প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৬টি ইট ভাটা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা এবং ৮টি ইট ভাটা সিলগালা করে বন্ধ করে দেয়।
কিন্তু অসাধু ভাটা মালিকরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাদের ইট ভাটাগুলো আবারও পরিচালনা করতে থাকেন।
আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন পরিবেশ দপ্তরের এনফোর্সমেন্ট টীম, থানা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
এআর
আপনার মতামত লিখুন :